নিয়তি | পিকুল দাশ
একটা শিশুর ক্যান্সার। তার পিতা মাতা আমার কাছে আসলো।বলল তাদের বাচ্চার ব্লাড
ক্যান্সার।বাচাতে ২০ লক্ষ টাকা লাগবে।বাচ্চাটার বয়স আর কত হবে? ৭ বছর।তো তাদের পারিবারিক অবস্থা ঘেটে দেখে বুঝলাম আসলেই তাদের পক্ষে ২০ লক্ষ টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে ক্যাম্পিং করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার পিতা একজন হোমিও ডাক্তার,আমার মা একজন শিক্ষিকা। বিশ্বাস করুন আমার এক ফোটাও লজ্জা করছিল না। কারন আমি পারিবারিক ভাবে শিক্ষা পেয়ে এসেছি ভাল কাজে নিজেকে ছোট মনে হয় না। বরং মন বড় হয়।আমার সাথে যারাই রাস্তায়
ক্যান্সার।বাচাতে ২০ লক্ষ টাকা লাগবে।বাচ্চাটার বয়স আর কত হবে? ৭ বছর।তো তাদের পারিবারিক অবস্থা ঘেটে দেখে বুঝলাম আসলেই তাদের পক্ষে ২০ লক্ষ টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে ক্যাম্পিং করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমার পিতা একজন হোমিও ডাক্তার,আমার মা একজন শিক্ষিকা। বিশ্বাস করুন আমার এক ফোটাও লজ্জা করছিল না। কারন আমি পারিবারিক ভাবে শিক্ষা পেয়ে এসেছি ভাল কাজে নিজেকে ছোট মনে হয় না। বরং মন বড় হয়।আমার সাথে যারাই রাস্তায়
নেমে কাজ করছে তাদের অধিকাংশ ছেলে মেয়েই ধনী পরিবারের ছেলে, মেয়ে। মোটামুটি সবার অবস্থা অন্তত আমার থেকে ভাল।
এই ক্যাম্পিং করতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে, অনেকের থেকে বিভিন্ন কথাও শুনতে হয়েছে। একদিন আমাদের কলেজেই ক্যাম্পিং করতে গেলাম শিশুটির জন্যে। কলেজে ডুকতেই বন্ধু বান্দব বিভিন্ন ধরনের বাজে মন্তব্য করতে লাগলো। কেউ বলে ধান্দা কত হয়েছে? দোস্ত তোর এই ব্যবসায় আমিও নামব। দোস্ত তোর ডেইলি ইনকাম কত? আচ্ছা দোস্ত তুই এসব করে কি লাভ পাস?
এসবের উত্তর আমি সেদিন দিই নি। দিতে ইচ্ছাও করে নি। এক বন্ধুর বাবার থেকে শিশুটির জন্যে সাহায্য চাইলাম যখন তিনি তার সন্তানকে কলেজ থেকে নিতে এসেছেন তখন। তার কিছু কথা চরম ভাবে গায়ে লেগেছিল।তার কথাগুলোর মর্মার্থ ছিল এমনটা "যে তোমরা এসব কেনো কর? তোমাদের বাপ মা কি তোমাদের শিক্ষা দেয় নি? রাস্তাঘাটে এভাবে মানুষকে বিরক্ত কেনো করো? আর ধান্দাবাজি চাঁদাবাজি বন্ধ করো। এসব কি শুরু করেছে তোমরা? তোমরা ভদ্র ঘরের সন্তান, তোমার কি আর কোনো কাজ কর্ম নেই?তোমরা এখানে কি ভাল কাজটা করে উল্টিয়ে ফেলছো আমি বুঝি তো।সব টাকা খাওয়ার ধান্দা।"
সেদিন আংকেলটি শুধু বলেছিলাম আংকেল আমরা ভদ্র ঘরের সন্তান যেহেতু কোনটা মেরে খাওয়ার টাকা আর কোনটা সাহায্য করার টাকা সেই শিক্ষাটুকু আমাদের বাবা মা আমাদের দিয়েছে। আর কিছু বলেনি সেদিন। আংকেলটা এরপর হেন তেন বলে চলে গেলো, আমরা আমাদের কাজ করতে লাগলাম। এর প্রায় দুবছর পর এই আংকেলটিই আমার বাসায় এসে কান্নাকাটি শুরু করেছিল কারন তার ছোট মেয়ের ক্যান্সার!
তার সন্তানের জন্যে ক্যাম্পিং করার অনুরোধ করছেন উনি!!! সেদিন কেবলই আংকেলের সেই কথাগুলো কানে বাজছিল। ধান্দাবাজ তোরা সব!! বাস্তবতা কতই না নিষ্ঠুর তাই না? যে মানুষটা আমাদের ধান্দাবাজ বলেছিল? যে মানুষটা আমাদের সৎ কাজটাকে অসৎ কাজ বলে রটিয়েছিল সেই মানুষটাই আজ আমাদের অসৎ কাজটাই করতে বলছে। না আমি উনাকে ফিরিয়ে দিই নি! উনার জন্যে কাজ করেছিলাম।
ভাল কাজে উৎসাহ দিতে না পারলেও দয়া করে নিরুৎসাহিত করবেন না। সমালোচনা করুন তবে
ঘঠনমূলক সমালোচনা করুন।হেয় করে, ছোট করে সমালোচনা করলে একই পরিস্থিতি তে আপনারও একদিন পড়তে হতে পারে। নিয়তি বলে একটা কথা আছে জানেন তো?
ঘঠনমূলক সমালোচনা করুন।হেয় করে, ছোট করে সমালোচনা করলে একই পরিস্থিতি তে আপনারও একদিন পড়তে হতে পারে। নিয়তি বলে একটা কথা আছে জানেন তো?
Post a Comment